নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরে উত্তর ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় রোদ বৃষ্টির খেলা চলছে। কড়া রোদে শরীর পুড়ছে, আবার হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, হাতিয়ার সোনাদিয়া, তমরদ্দি ও চরকিং ইউনিয়নে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। আমরা ঠিকাদারের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কার কাজ চালিয়ে চাচ্ছি। যেন কোনো এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সংস্কার কাজ জোরদারের নির্দেশ দিয়েছি।
চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহি উদ্দিন আহম্মদ বলেন, গতকালের জোয়ারে বেড়িবাঁধ অতিক্রম করে চরকিং ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কার করা জরুরি। না হলে যেকোনো বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে হাতিয়ার উপকূল তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে অন্তত ১১টি গ্রামের লোকালয়ে। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে গৃহপালিত পশুগুলোকে পাশের আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা প্লাবিত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য শুকনো খাবার নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। এরমধ্য চিড়া, মুড়ি, চাল, খাবার স্যালাইন, মোমবাতি, দিয়াশলাইসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী রয়েছে। আআশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা লোকজনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাতিয়া উপজেলায় ১৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে ৮০ হাজারের বেশি মানুষজনকে বিপদে আশ্রয় দেয়া যাবে।
জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস থেকে মেঘনা উপকূলীয় বাসিন্দাদের রক্ষায় নোয়াখালীতে ৩৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগের আগে ও পরে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ১০৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মুহূর্তে মেঘনা উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল, ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, শিশুখাদ্যের জন্য ৯ লাখ ও গোখাদ্যের জন্য ৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ লাখ টাকা ও ৩০০ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। হাতিয়া উপজেলা মেঘনা নদীবেষ্টিত। যেকোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই দ্বীপটির ওপর আঘাত হানে।
Leave a Reply