এনকে টিভি প্রতিবেদক:

 

বিচারপ্রার্থী নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের সেই চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা জজ মোহাম্মদ সামস্উদ্দীন খালেদ জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর এ আদেশ দেন।

এর আগে তাকে একই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে মোজাম্মেল হোসেন আদালতে আত্মসমার্পন করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তার আবেদনের শুনানী শেষে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশদেন। বিকেলে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর রাতে সুবর্ণচরের চরবাটা ইউপির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের কাছে বিচার চাইতে তার কার্যালয়ে যান এক নারী। পরদিন ৫ অক্টোবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাতভর আটকে রেখে তাকে মারধর ও ধর্ষণ করার অভিযোগে চরজব্বর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই নারী। মামলায় রবিউল নামের অপর এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।

ওই মামলা প্রথমে তদন্ত করে আদালতে চ‚ড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরবর্তীতে আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে পুন:তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশদেন। পুন: তদন্তের পর মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২।

এরপর তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এরই মধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে নারী নির্যাতন মামলার আসামি হওয়ায় মোজাম্মেল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে, শালিসের নামে স্কুলে ছাত্রী ও তার পরিবারকে মারধর, অবৈধ বালু উত্তোলন, বিচার প্রার্থী এক অসহায় ব্যক্তিকে টয়লেটে আটকে রেখে নির্যাতন, শত শত সরকারি গাছ কর্তন, ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব আদায়ে বিধিবিধান না মানা, একক ক্ষমতায় ট্রেড লাইসেন্স প্রদান, এলজিএসপির আওতায় ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে নিজ বাড়ির রাস্তা তৈরি, শহীদ মিনারে জুতা পায়ে দিয়ে অসম্মান করা, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

বহিষ্কৃত এই ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ীতে তার বাড়ির কেয়ারটেকারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়, ঘটনাটির সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক সময়ের কণ্ঠস্বরের সাব এডিটর, ডেইলি অবজাভারের প্রতিনিধি ও দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিনের প্রতিবেদক মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমনের ওপর হামলা করে মোজাম্মেল চেয়ারম্যান। পরে সাংবাদিক সুমন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন জিডি নং- ৬১১। স্থানীয়রা মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।

 

  • এনকে টিভি/বি/এস/এম/এস

Sharing is caring!