মো. সেলিম:

কত অপেক্ষা সন্তানের জন্য বাবা মায়ের। তারপর একদিন সন্তান পৃথিবীতে আসে। পৃথিবীতে আসার পর বাবা মায়ের দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়। কারণ একটাই তা হল সন্তানকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। প্রত্যেক বাবা-মা ই চান তার সন্তানের যেন সঠিক মানসিক বিকাশ ঘটে। শিশু বয়স থেকেই সন্তানের সুস্থতার জন্য অনেক নিয়ম কানুন বাবা-মাকে মেনে চলতে হয়। কারণ বাবা মা এর একটুখানি অসাবধানতা সন্তানকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারে এমনকি জীবন বিপন্ন হতে পারে। আপনার ছোট্ট সোনামণির জন্য খুবই দরকারি কিছু টিপস আমরা আজকে আপনাকে দিব।

১। ভুল করেও আপনার সদ্যোজাত নবজাতক শিশুকে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে দিবেন না। অনেকে পানি, মধু, চিনির পানি বা মিসরির পানি খেতে দেন না জেনেই। এটার প্রভাব তাৎক্ষণিক ভাবেই পড়তে পারে আপনার শিশুর উপর।

২। শিশু জন্মের পর প্রথম তিন দিন পর্যন্ত শিশুকে গোসল করাবেন না।

৩। শিশু যদি না খেতে চায় তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।

৪। শিশুকে কখনোই একা একা উঁচু স্থানে বসিয়ে রেখে আপনি দূরে কোথাও যাবেন না।

৫। গোসল করিয়ে সাথে সাথে শিশুর শরীরে তেল লাগাবেন না। বরং গোসলের আগে তেল ব্যবহার করতে পারেন।

৬। প্রথম ৬ মাস শিশুকে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে দিবেন না।

৭। শিশু কান্না করলে তাকে শান্ত রাখার জন্য মুখে চুষনি দিবেন না।

৮। রাতে ঘুমের মধ্যে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার শিশুর মুখে দুধ দেবেন না।

৯। অনেকের ধারণা জ্বর হলে মোটা কাঁথা-কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখলে জ্বর কমে যাবে। ভুলেও এ কাজ করবেন না। শিশু যেভাবে আরাম বোধ করে সেভাবে রাখুন।

১০। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে স্যালাইন এর পাশাপাশি সব খাবার দিবেন শিশুকে। কোন খাবার বন্ধ করবেন না।

১১। কখনোই অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে শিশুর উপর চাপ সৃষ্টি করবেন না।

১২। আপনার শিশুকে বাইরের কোন খাবার, দীর্ঘ দিনের ফ্রিজের খাবার বা বাসি খাবার দেবেন না।নিজে হাতে তৈরি করুন তার খাবার।

১৩। শিশু যতদিন না নিজে নিজে হাঁটতে পারে ততদিন শিশুকে ওয়াকার দিয়ে হাঁটানোর চেষ্টা করবেন না।

১৪। শিশুর যদি শ্বাস কষ্টের জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাকে কখনোই ঘুমের ওষুধ দিবেন না।

১৫ অনেকের ধারনা কলা, কমলা ও অন্যান্য ফলমূল খেলে শিশুর ঠাণ্ডা লাগে বা বেড়ে যায়। এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। সব ফলমূল খেতে দিন আপনার শিশুকে।

১৬। না ধুয়ে কোন ফল খাওয়াবেন না শিশুকে।

১৭। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে শিশুকে কখনো কোন ওষুধ খাওয়াবেন না।

১৮। শিশু না খেলে বা দুষ্টমি করলে কখনো তাকে ভয় দেখাবেন না। এতে আপনার শিশুর মানসিক সমস্যা হতে পারে।

১৯। শিশুকে কখনো মারবেন না, সে কোন খারাপ কিছু করলে তাকে বুঝিয়ে বলুন।

২০। শিশুর সামনে বসে কখনো ধূমপান করবেন না।

২১। শিশুকে সাথে নিয়ে কোন ধরনের ভয়ের সিনেমা বা নাটক দেখবেন না।

২২। রান্নাঘর বা টয়লেটে একা একা আপনার শিশুকে যেতে দিবেন না।

২৩। কোন ধরনের ধারালো জিনিস যেমন সুই, কাঁচি, ছুরি এগুলো শিশুর সামনে রাখবেন না।

২৪। সমস্যা খুব গুরুতর না হলে শিশুর এক্সরে করবেন না।

২৫। সবরকম ওষুধ শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন।

শিশুকে নিরাপদে রাখতে মেনে চলুন সব ধরনের সতর্কতা। ভালো থাকুক আপনার সোনামণি। হাসি থাকুক আপনার মুখে সবসময়।

Sharing is caring!