এনকে টিভি ডেস্ক:

 

বেশ কিছুদিন ধরে ভারতে একের পর এক প্রতারণার ঘটনা উদ্‌ঘাটিত হচ্ছে। এতে ব্যাংকের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় নতুন করে ৪২টি মামলা করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। প্রতারণার অঙ্কটা বেশ বড়, মোট ৭ হাজার ২০০ কোটি রুপি। আর ওই অর্থের তদন্তে নেমে দেশের ১৮৭টি জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে তারা।

 

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৯৫ হাজার ৭০০ কোটি রুপির বেশি প্রতারণা হয়েছে। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সময়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৭৪৩টি। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এ কথা জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকগুলোতে প্রতারণা ঠেকাতে সরকার ইতোমধ্যেই সার্বিকভাবে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। গত দুটি অর্থবছরে বিভিন্ন নিষ্ক্রিয় সংস্থার ৩ লাখ ৩৮ হাজার হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।

জালিয়াতির শিকার মোট ১৫টি ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে স্টেট ব্যাংক, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি), দেনা ব্যাংক, কানাড়া ব্যাংক, ব্যাংক অব বারোদা, ব্যাংক অব মহারাষ্ট্র, এলাহাবাদ ব্যাংক, সেন্ট্রাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইডিবিআই ব্যাংকসহ প্রায় সবই, যার মধ্যে অন্যতম পিএনবির ১৪ হাজার কোটির জালিয়াতি।

পিএনবিতে জালিয়াতির ঘটনা ভারতের ব্যাংক পরিচালনার অনেক ত্রুটি সামনে নিয়ে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন ঋণ দিতেও সাহস পাচ্ছে না। যত জালিয়াতি ধরা পড়েছে, তত উদ্বেগ বেড়েছে ব্যাংকিং মহলে। উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষও। এর মধ্যে অনুৎপাদনশীল সম্পদের জেরে বহু ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ।

এসব কারণে বিভিন্ন ব্যাংকঋণ ঝুঁকিমুক্ত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ছয় মাসের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার প্রতারণার ঘটনা—ব্যাংকিং ব্যবস্থার দক্ষতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আমজনতার সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধে ব্যাংকগুলোর পদক্ষেপের কার্যকারিতাও প্রশ্নবিদ্ধ।

এই পরিস্থিতিতে ব্যাংকে গ্রাহকের আমানতের ওপর বিমার সুরক্ষাকবচ আরও সংহত করার দাবি তুলেছে রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মী ইউনিয়ন। তাদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো থেকে ভারত পিছিয়ে আছে। তাই গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক জমাকে বিমার আওতায় আনার দাবি তুলেছেন ইউনিয়নের নেতারা। পাশাপাশি সব শহুরে সমবায় ব্যাংককে (আরবান কোঅপারেটিভ ব্যাংক) পুরোপুরি রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে আনার দাবিও তোলা হয়েছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল

Sharing is caring!