বহুল আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেল অপহরণের ঘটনায় মূলহোতা মালেকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। একই ঘটনায় ভুক্তভোগী হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী হিমেল পরিবারের সঙ্গে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে থাকতেন। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থী গত ২৬ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন।

ওদের সবার হাতে অস্ত্র, টাকা নিয়ে এসে আমাকে বাঁচাও মা

পরিবারসূত্রে জানা যায়, বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক ব্যবসায় হাত দেওয়া হিমেল গত ২৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নিজ প্রাইভেটকারে করে শেরপুরের উদ্দেশ্যে বের হন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন চালক সামিদুল। এরপর আর তার খোঁজ মেলেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও একমাত্র সন্তানের সন্ধান না পেয়ে মা তহুরা হক উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। হঠাৎ একদিন মায়ের মোবাইলে ভিডিও বার্তা আসে হিমেলের। তারপরই পরিষ্কার হয় হিমেলের অপহরণের ঘটনা।

ওই ভিডিও বার্তায় মাকে উদ্দেশ্য করে অপহৃত হিমেলকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়— “মা, মা, ও মা, ওদের ভাষা আমি বুঝি না মা। ওদের একজন শুধু বাংলায় কথা বলে মা। বাকিদের কথা বুঝি না মা। ওদের সবার কাছে অস্ত্র। কাল যদি না আসো মা, তাহলে ওরা আমার হাত-পা কেটে বাংলাদেশে ভাসিয়ে দেবে বলছে। কাল আসো মা। ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগবে টাকা পৌঁছে দিতে মা। কালই আসো, টাকা দিয়ে আমাকে নিয়ে যাও মা।”

একাধিক ভারতীয় মোবাইল নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ভুক্তভোগীর মাকে ফোন দিয়ে ছেলেকে মুক্ত করতে মুক্তিপণ হিসেবে দুই কোটি টাকা দাবি করা হয়। পরবর্তীতে বলা হয়— ৩০ লাখ টাকা না দিলে সন্তানের হাত কেটে হত্যা করা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় অপহরণের ধারায় নিয়মিত মামলা হয়।

এ প্রসঙ্গে কমান্ডার মঈন বলেন, ঘটনার পর থেকে অপহৃত হিমেলকে উদ্ধারে ছায়া তদন্ত ও অভিযান পরিচালনা চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

একই ঘটনায় অপহরণ চক্রের মূলহোতা মালেকসহ পাঁচজনকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকিসহ নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান এ র‍্যাব কর্মকর্তা।

Sharing is caring!