এনকে টিভি প্রতিবেদক:

 

নোয়াখালীর সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নে পুলিশের উপস্থিতিতে বন্দোবস্তের ভূমি থেকে একটি অসহায় পরিবারের সদস্যদের বসতঘর ভেঙ্গে আসবাবপত্র ও ঘরের যাবতীয় মালামাল লটু করে ওই ভূমি জবর দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে তাবু ঘাটিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে ওই ভোক্তভোগী পরিবার।

 

মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল পর্যন্ত পূর্ব মাইজচরা গ্রামের আবুল কাশেমের বাড়িতে এ লুটপাট ও ভূমি দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটে।

 

ভোক্তভোগী আবুল কাশেম ও তার ভাই মো. জাকের জানান, উপজেলার ২৭নং পূর্ব মাইজচরা মৌজার জমাখারিজ ২৫০০ খতিয়ানের ২৬, ২৭, ১৮ ও ২৮ দাগে ১ একর ৪৫ শতাংশ ভূমি নথি নং-৩০৩/২০১৭-১৮ মূলে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্টের আদেশে বন্দোবস্ত সূত্রে মালিক ও দখলকার হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস শুরু করেন স্থানীয় মৃত আবদুল হাসেমের ছেলে আবুল কাশেম। সম্প্রতি ওই ভূমি জবর দখল করার অপচেষ্টা এবং ভূমি থেকে আবুল কাশেমের পরিবারকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয় ভূমি গ্রাসী মনির হোসেন, বেলাল হোসেন, মাসুম, আবুল কালাম আজাদ, ছিদ্দিক উল্যা ও কাজল নামের সঙ্গবদ্ধ চক্র।

 

এনিয়ে ভোক্তভোগী ভূমির বন্দোবস্তকারী আবুল কাশেম ওই চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত নালিশী ভূমির উপর স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। এরপর আদালতের জারিকৃত নোটিশ পাওয়ার পর ওই চক্রের সদস্যরা সন্ত্রাসী ভাড়া করে গত ১২ ফেব্রæয়ারি আবুল কাশেমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় তাদের বাঁধা দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা ভোক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মারধর করে আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

ওই ঘটনায় ভোক্তভোগী আবুল কাশেমের ভাই মো. জাকের সুধারাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলা না নেয়ায় নোয়াখালী সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।

 

ভোক্তভোগী আবুল কাশেম, তার স্ত্রী হাসিনা বেগম, স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, সেলিম, হজল হক, নিজাম উদ্দিন, সুজন, কদ বানু, জুলেখা খাতুন ও বকুল বেগম জানান, পূর্বের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কেরানী সন্ত্রাসী ছিদ্দিক উল্যার নেতৃদ্ধে একদল সন্ত্রাসী কাশেমের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বাড়ি থেকে দু’শ গজ দুরে সুধারাম থানার পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো। হামলার সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে চাইলে ছিদ্দিক ও অন্যান্য সন্ত্রাসীরা পরপর কয়েকটি পাকা গুলি ও ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটালে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সন্ত্রাসীরা বাড়ির বসতঘরের ভিতর থেকে সবাইকে বাহির করে দিয়ে বসতঘর ভেঙ্গে মালামালসহ লুট করে গাড়িযোগে নিয়ে যায়।

 

অভিযুক্ত মনির হোসেন জানান, তার পিতা মরহুম হোসেন আহম্মদ তাদের মালিকীয় ভূমিতে আবুল কাশেম ও তার পরিবারকে বসবাস করতে আশ্রয় দেন। কিন্তু তাদের ভূমিতে বসবাসের এক পর্যায়ে কাশেম তাদের ভূমির মালিকানা দাবি করে বসেন। এ বিরোধের জের ধরে গত চলতি মাসে তাদের ভূমির উপর স্থাপিত একটি ঘর ভেঙ্গে ফেলে কাশেম ও তার পরিবারের সদস্যরা।

 

সুধারাম মডেল থানার ওসি নবীর হোসেন পুলিশের উপস্থিতিতে বসতঘর লুটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বন্দোবস্তের ভূমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের জের ধরে কাশেমরা নিজেদের ঘর নিজেরা ভেঙ্গে প্রতিপক্ষকে পাষানোর চেষ্টা করছে। এনিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় মিমাংসার জন্য ডাকা হলে কাশেম বার তার পরিবারের কেউ উপস্থিত হয়নি।

 

  • এনকে টিভি/বি/এস/এম/এস

Sharing is caring!