রাসেল মাহম্মুদ অনন্ত ॥ দেশজুড়ে ইয়াবা আসক্তদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন চোরাই পথে ৩০ লক্ষাধিক ইয়াবা দেশে ঢুকে বলে বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা গেছে। সে হিসাবে শুধু ইয়াবা বাবদই প্রতিবছর অন্তত মিয়ানমারে ১৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে থাকে। দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বিরাট অংশ মাদকাসক্ত হওয়ায় তাদের ঘিরে সংঘবদ্ধ চক্র নানারকম বাণিজ্যিক ধান্ধায় মেতে উঠেছে। ফলে তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন মাদক বেচাকেনা ও সেবনের স্পট। সাপ্তাহিক আজকালপত্র পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধিদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নোয়াখালী জেলার মাদক বেচাকেনা ও মাদক সেবনের চিত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নোয়াখালী জেলাতেই প্রায় দুই শাতাধিক স্পটে বিক্রি হয় মরণ নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্পটগুলো হলো- জেলা শহর মাইজদীর নতুন বাসস্ট্যান্ড, মাইজদী বাজার-হাসানহাট রোড, সেক্রেটারি মোড়, একলাশপুর বাজারের আশপাশে, গাবুয়া, মাইজদী বাজারের বেয়াজ্যা বাড়ি, জিসান হোটেল, জেলগেট, চিনিওয়ালার বাড়ি, হাসপাতাল সড়ক, হাউজিং ফ্ল্যাট সড়ক, আরাফাত কলোনি, বসিরের দোকান, পাঁচ রাস্তার মোড়, ইসলামগঞ্জ সড়ক, নতুন বাসটার্মিনাল, শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের পেছনে, জেনারেল হাসপাতাল সড়ক, জেল গেট এলাকা, পাটারীবাড়ি, মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকা, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক, ছুল্লার চা দোকান, হিংসা মার্কেট, বেলালের চা দোকান, হরিনারায়ণপুর স্টেশন ও এর আশেপাশে, রায়বাহাদুর বাড়ি, সাহাপুর রেললাইন সংলগ্ন, দত্তেরহাট জেলেপাড়া, গুপ্তাংক, জজকোর্টের পিছনের দোকান, টেলিগ্রাম অফিসের সম্মুখে, দত্তেরহাট, দত্তবাড়ির দরজা, সদর উপজেলা পরিষদের সম্মুখে, শ্রীপুর, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে, বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকিদারের দোকান, ৫নং ইউনিয়নের পশ্চিম জামালপুরের দোকান, হায়দর মিয়ার হাটের আশপাশে, নলপুর স্কুলের আশপাশের এলাকা, বান্দেরহাট কলেজের আশপাশের এলাকা, উদয় সাধুরহাট, সোনাপুর বাসটার্মিনাল, রশিদ কোল্ডস্টোরেজ ও আশপাশের এলাকা, মতিপুর ব্রিজ (ওহাব কলোনি), মুকিমপুর আশ্রয়ন, তিন ভাইয়ের দোকান, মাছিমপুর এবাদের দোকান সংলগ্ন, সোনাপুর কাঠপট্টি, কালিতারা বাজার, ডাক্তার বাজার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা, সোনাপুর পৌর বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় ও করমুল্লা বাজার।
জেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনীর দক্ষিণ বাজার, মাদ্রাসা সড়ক, করিমপুর সড়ক, সিঙ্গার সড়ক, চৌরাস্তা, পূর্ব বাজার, গোলাবাড়িয়া, টক্কাপোল, আটিয়াবাড়ির পোল, আটবাড়িয়া, কলেজ সড়ক, মণ্ডলপাড়া, রেলওয়ে স্টেশন এলাকা, জমিদারহাট, দোকানঘর, মিয়ারপোল, বড়পোল, কেন্দুরবাগ, বাংলাবাজার, বেলাল মিয়ার পোল, পলোয়ান পোল, ঈদগাঁও আমির বাজার, চন্দ্রগঞ্জ পূর্ববাজার, একলাশপুর বাজার, গাবুয়া, রমজানবিবি বাজার এলাকা, কুতুবপুর ইউনিয়নের কাজিরহাট, বটতলা, কিত্তনীয়ার হাট, সেতুভাঙা, দুর্গাপুর ইউনিয়নের দোকানঘর, শুরেরগো পোল, দাওয়াত খোলা, শিংদারহাট, লাউতলী, হোরনবিবি বাজার, নরোত্তমপুর ইউনিয়নের পন্ডিত বাজার, রইশ্যার দোকান, মফিজ কোম্পানির রাস্তার মাথা, স্কুলঘর, গোপালপুর বাজার, আমানউল্যাহপুর বাজার।
এসব এলাকায় কারা মাদকদ্রব্য বিক্রি করে তা সবারই জানা। উদ্বেগের কারণ হলো এ মরণ নেশা বর্তমানে একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামে পর্যন্ত বিস্তার করেছে। এরপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শক। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনের কিছুটা তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও নোয়াখালীতে উল্লেখযোগ্য মাদকবিরোধী কোনো বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে কি-না তা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরই ভালো জানে।

Sharing is caring!