ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারো উত্তর চর ছান্দিয়ায় নুসরাতের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবে পিবিআই। এছাড়া আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) নুসরাতের পরিবারের সঙ্গে ইফতার করবেন বলে জানিয়েছেন পিবিআই ফেনীর পরিদর্শক শাহ আলম।

২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তবে পরিবার ও পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে ১০এপ্রিল মৃত্যুবার্ষিকী করা হয়। এর আগে ৬ এপ্রিল সকালে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে গেলে হল থেকে ডেকে পাশের ভবনের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় তাকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। ১০ এপ্রিল বিকালে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে জেলার সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নুসরাত জাহান রাফিকে বর্বরোচিত কায়দায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ২০১৯সালের ২৪ অক্টোবর মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ -দৌলা সহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ ।

রায় ঘোষণার পর থেকে রাজপথে সক্রিয় ছিল দন্ডপ্রাপ্তদের পরিবার ও স্বজনরা। সবশেষ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করবে দন্ডপ্রাপ্তদের পরিবার ও স্বজনরা।

নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তায় তিনজন পুলিশ সদস্য বাড়ি পাহারায় রয়েছেন। নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার বলেন, আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। শুনেছি উচ্চ আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করেছে। আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসামিদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্যও অনেক কিছু করেছেন। তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন, যা আমি কখনো ভুলব না।

Sharing is caring!