নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেছেন, নিজে সৎ হয়ে পরে অন্যকে সৎ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া উচিত।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অংশীজনের অংশগ্রহণে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, নৈতিকতা বিষয়টি পরিবার থেকে আসে। সৎ বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব, পরিবেশ এসবের মাধ্যমে একজন সৎ মানুষ তৈরি হয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ আগে নিজে সৎ হয়ে পরে অন্যকে সৎ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো- নিজে সৎ থাকা, আর অন্যটি হলো- অন্যায়ের সঠিক শাস্তি।

উপাচার্য আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, একই সঙ্গে নোবিপ্রবিও এগিয়ে যাবে। তিনি আমাকে যে বিশ্বাস করে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করার চেষ্টা করব। আজকের আয়োজনে যারা এসেছেন এবং মূল্যবান মতামত দিয়েছেন সকলকে ধন্যবাদ।

ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) আয়োজনে আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ‘কি নোট স্পিকার’ হিসেবে ছিলেন নোবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাহাদ হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অজিত দেব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন এবং নোয়াখালী জেলার দুর্নীতি দমন কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. ফারুক আহমেদ।
আরও উপস্থিত ছিলেন— বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজুল করিম বাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বাদল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. শাজাহান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নোবিপ্রবি আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোহাইমিনুল ইসলাম সেলিম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে এ ধরনের অংশীজন সভা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষা ও গবেষণায় বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ে অত্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে নোবিপ্রবি। একই সাথে গবেষণা ও প্রকাশনা ক্ষেত্রেও সাম্প্রতিক সময়ে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, শিক্ষক সমাজ সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান বক্তারা।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অজিত দেব এ ধরনের অংশীজন সভা আয়োজনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এই বিষয়গুলো মেনে যদি কোনো রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য কিছু বিধিবদ্ধ কাঠামো নির্ধারণ করে তাই হলো সুশাসন। রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সুশাসন প্রয়োজন। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রয়োগের যে নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে। বর্তমান সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদেরও পরিবার ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে শুরু করতে হবে এর চর্চা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, আমরা আমাদের আচার-আচরণে সচেতন থাকব এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করব।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের তুলনায় আমরা বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভালো অবস্থায় আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তরগুলো নিজ নিজ অবস্থানে সততার সাথে সেবা প্রদান করে চলেছে। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কেউ হয়রানির শিকার হয় না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাদের একজন সৎ উপাচার্য দিয়েছেন যার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে।

Sharing is caring!