নিউজ ডেস্ক:

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু জ্বর। এতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য কোনও চিকিৎসা এখনও পর্যন্ত নেই। এতদিন এর কোনও ভ্যাকসিনও ছিল না। তবে খুব শিগগিরই এই সমস্যা মিটতে যাচ্ছে।

প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। গত মে মাসের ১ তারিখ ডেংভেক্সিয়া নামের এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত সেটা সবার নাগালে আসেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুমোদনপ্রাপ্ত ভ্যাক্সিনটি ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের মধ্যে চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসই প্রতিরোধ করবে।

ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডেপুটি কমিশনার আন্না আব্রাহাম বলেছেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগ এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে আমরা কাজ করছি। ডেঙ্গু রোগের কোনও প্রতিকার ছিল না। ফলে নতুন এই ভ্যাকসিন বেশকিছু অঞ্চলের মানুষের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দেবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বায়োলজিক্স ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক পিটার মার্কস বলেন, এক টাইপের ডেঙ্গুতে কেউ আক্রান্ত হলে ওই নির্দিষ্ট টাইপটির বিরুদ্ধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। কিন্তু একই রোগী যদি ওই টাইপের পর বাকি তিনটির যেকোনও একটি টাইপে আক্রান্ত হন তাহলে তার অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। এমনকি তখন তার মৃত্যুও হতে পারে। এক্ষেত্রে নতুন ভ্যাকসিনটি মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি কমাবে।

মোট ৩৫ হাজার রোগীর ওপর ডেঙ্গু প্রতিরোধী ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডেংভেক্সিয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এখন পর্যন্ত যারা ডেংভেক্সিয়া গ্রহণ করেছে তাদের মাথা ব্যথা, পেশীতে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, ক্লান্তি কিংবা সামান্য জ্বরের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এই ভ্যাকসিনটি শুধু তাদের জন্যই যারা এরই মধ্যে একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ যারা এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি তারা ভ্যাক্সিনটি গ্রহণ করতে পারবেন না। এটি মূলত তৈরি করা হয়েছে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ভয়াবহতা প্রতিরোধের জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ৫ লাখ রোগী মারাত্মক অবস্থায় চলে যান এবং ২০ হাজার মারা যান। যুক্তরাষ্ট্রে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব তেমন একটা নেই। তবে আমেরিকান স্যামোয়া, পুয়ের্তো রিকো, গুয়াম, ইউএস ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডস, ল্যাটিন আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় কয়েকটি অঞ্চলে ডেঙ্গু দেখা যায়।

Sharing is caring!