বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াকে কেন্দ্র করে দলীয় কর্মীদের অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনকারী ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার সুধারাম থানার কাদির হানিফ গ্রামের মৃত মিজানুর রহমান মুহুরীর ছেলে মো. রাফেজ (২৫), বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার পৌর হাজীপুর এলাকার মৃত শাহজাহানের ছেলে মো.আবুল হায়াত রায়হান ওরফে খালাশী রায়হান (২৬), সদর উপজেলার পশ্চিম শুল্যকিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকেরে ছেলে মো. ইউনুছ (৪০), উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে নুরুল আমিন (৩৯)।

.

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।

 

.

তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর দুটি উপজেলায় পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গ্রেফতার কৃত আসামিদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) বিকেলের দিকে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহীনের অনুসারীদের মধ্যে শহরের জামে মসজিদ মোড় এলাকায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় একরামুল করিমের অনুসারীরা জামে মসজিদ মোড়ের উত্তর দিকে অবস্থান নেয়। একই সময়ে শাহীনের অনুসারীরা জামে মসজিদের দক্ষিণ দিকে জিলা স্কুলের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়।

.
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ৯ রাউন্ড শর্টগান ফায়ার করে তাদের অনুসারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময়ে অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিনের এক কর্মী প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে প্রদর্শন করে। যার ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে এ ঘটনায় সুধারাম থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে সুধারাম থানার একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে উক্ত ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করে। ভিডিও ক্লিপ পর্যালোচনা করে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনকারী ৬ মামলার আসামি মো.রাফেজকে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার করে।
.
গ্রেফতারকৃত নুরুল আমিন ২ নং দাদপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের ফজলুল হক ডাক্তার বাড়ীর মৃত নুর মোহাম্মদ খলিফার ছেলে।এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়,নুরুল আমিন মাদক সেবন এবং ইয়াবা কারবারি হিসেবে পরিচিত।এলাকায় চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসী সহ সকল অনৈতিক কর্মকান্ডের নাটের গুরু গ্রেফতারকৃত নুরুল আমিন।এছাড়াও বিভিন্ন সময় অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

.
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে উক্ত ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করে। ভিডিও ক্লিপ পর্যালোচনা করে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনকারী ৬ মামলার আসামি মো. রাফেজকে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার করে।

.
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় অস্ত্র হাতে তিন যুবকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
.
আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে তিন যুবকের অস্ত্র হাতে ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও দেখা যায়।
.
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্রধারী এক যুবক প্রতিপক্ষের দিকে গুলি করছেন এবং বাকী দুজন প্রতিপক্ষদের ধাওয়ার মুখে অস্ত্র হাতে অন্য সহযোগীদের সঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে অস্ত্রধারীদের ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় সচেতন মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানায়।

Sharing is caring!