এনকে টিভি স্পোর্টস ডেস্ক:

কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দিবারাত্রির টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানেই অলআউট সফরকারী বাংলাদেশ। গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জে নাম লেখিয়ে অসহায় আত্নসমর্পন করেছে মুশফিক-মুমিনুলরা। ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হয়েছে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের দলপতি মুমিনুল হক।

 

ঐতিহাসিক এই টেস্টে ব্যাটিংয়ে নেমেই ভারতীয় পেসারদের তোপে পড়ে সাদমান-ইমরুল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিদায় নিয়েছেন টাইগার ওপেনার ইমরুল কায়েস। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর ইশান্ত শর্মার ওই ওভারেই আউট হয়েছেন তিনি। আউট হবার আগে তিনি ১৫ বল খেলে ৪ রান করেন। দলীয় রান তখন ১৫।

এর ২ রান পরেই টাইগার শিবিরে জোড়া আঘাত জানেন উমেশ যাদব। তিনি প্রথমে ফেরান অধিনায়ম মুমিনুল হককে। রোহিত শর্মার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হবার আগে মুমিনুল ৭ বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। মুমিনুলের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মোহম্মদ মিথুন। তিনি প্রথম বলেই উমেশ যাদবের বলে বোল্ড আউট হয়ে যান। ১৭ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর দলীয় ২৬ রানে বাংলাদেশ দলের অন্যতম ভরসা মুশফিকুর রহিম সাজঘরে ফেরেন। তিনিও রানের খাতা খুলতে পারেননি। তাকে সাজঘরে ফেরান মোহম্মদ শামি। মুশফিকুরের পর বিদায় নেন বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম। উমেশ যাদবের বলে উইকেটের পেছনে ঋদ্ধিমান সাহাকে ক্যাচ দেন তিনি। ফেরার আগে করেন ৫২ বলে ৫ চারে ২৯ রান করেন।

দলীয় ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে ভরসা দিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং লিটন দাস। দলীয় ৬০ আর ব্যক্তিগত ৬ রানে ইশান্ত শর্মার বলে উইকেটের পেছনে ধরা পরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই জুটিতে থেকে আসেন ২২ রান।

দলের হাল কিছুটা ধরার চেষ্টা করছিলেন লিটন দাস। কিন্তু ম্যাচের ২১.৪ ওভারে মাথায় আঘাত পান এই ব্যাটসম্যান। ফলে ব্যক্তিগত ২৪ রানে মাঠ ছেড়ে উঠে যেতে হয় তাকে। লাঞ্চ থেকে ফিরেই নিজের উইকেট বিসর্জন দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এবাদত। ইশান্ত শর্মার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

এরপর উইকেটে আসেন লিটন দাসের বদলি হিসেবে মেহেদী মিরাজ। বাংলাদেশের মূল একাদশে না থেকেও লিটন দাসের বদলি হিসেবে নামেন তিনি। তবে হতাশ করলেন তিনিও। ব্যক্তিগত ৮ রানে ইশান্ত শর্মার বলে পূজারার তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান।

উইকেট আগলে রাখতে ব্যর্থ হন নাইম হাসানও। ১৭ রানে তাকে ফেরত পাঠান ইশান্ত শর্মা। এরপর মোহাম্মদ সামি তার দ্বিতীয় শিকার হিসেবে রাহীকে বেছে নিলে বভাংলাদেশের ১ম ইনিংস থামে ১০৬ রানে।

ভারতের হয়ে ৫ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা, ৩ উইকেট নেন উমেষ যাদব এবং দুইটি উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা।

বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকটা হয়েছিল ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে। এবার আরেকটি অভিষেক হল বাংলাদেশের। প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্টে, গোলাপি বলে। এবারও প্রতিপক্ষ ভারত। তবে, ভেন্যু এবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনস। ভারতও প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্টে খেলতে নেমেছে।

এর আগে দিবারাত্রির টেস্ট দেখতে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী উড়োজাহাজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। পরে বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টার দিকে পৌঁছেছেন কলকাতায়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী তাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় ইডেন গার্ডেনসে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে ঘণ্টা বাজিয়ে ম্যাচের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এরপরে খেলার প্রথম সেশন উপভোগ করে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তিনি। তারপর মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতেও মিলিত হবেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিমানবন্দরে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী ও বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন

বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার চলমান সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে ১-০ তে এগিয়ে আছে স্বাগতিক ভারত। এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক ঘটেছে। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে দিবারাত্রির টেস্টে অভিষেক ঘটছে দুই দেশেরই।

বাংলাদেশ একাদশ:

ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), আবু জায়েদ রাহী, এবাদত হোসেন, আল-আমিন এবং নাইম হাসান।

ভারত একাদশ:

মায়াঙ্ক আগারওয়াল, রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), আজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবীচন্দ্রন আশ্বিন, উমেষ যাদব, মোহাম্মদ শামী, ইশান্ত শর্মা।

Sharing is caring!