অন্যান্য | তারিখঃ নভেম্বর ২৭, ২০১৯
জিহাদ সুলতান: শীত,নামটা শুনলেই মনের ভিতর এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়।ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ।এই ছয়টি ঋতুর মধ্যে পঞ্চম ঋতু হল শীত।পঞ্জিকায় বাংলা মাসের হিসাব অনুযায়ী পৌষ-মাঘ মাস নিয়ে শীতের ব্যাপ্তিকাল নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে ইংরেজি মাসের হিসেব করলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত শীতকাল। কিন্তু বাস্তবে নভেম্বর থেকেই সারা দেশে শীতের আমেজ অনুভূত হয়। বাংলার ঘরে ঘরে ঋতু হিসেবে শীতের ব্যাপক জনপ্রিয়তা লক্ষনীয়।শীতকালে দেশে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে।শীতের সময় বাংলার ঘরে খুশির আমেজ লক্ষ করা যায়। এ সময় নানান রকম পিঠা তৈরি করা হয়,শুধু যে পিঠা তা নয় পায়েস মিষ্টান্নের মত নানা ধরনের উপাদেয় খাবারসহ মৌসুমি ফল আর বিভিন্ন রকম শাকসবজি পাওয়া যায়।
শীত শব্দটার সাথে যেমন এক আনন্দের অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে তেমনি শীতের সময় দেখা যায় গরিব ও অসহায় মানুষের কষ্টের প্রতিচ্ছবি। তীব্র শীত এদেশের খেটে খাওয়া, গরিব অসহায় মানুষের জন্য অত্যন্ত দুর্ভোগের কারণ। প্রত্যেক বছরই শীতকালে গরম পোশাকের অভাবে অনেক প্রাণহানি ঘটে। রাস্তার পাশে,রেলওয়ে ষ্টেশনে, খাদ্য বস্র ও বাসস্থান হীন যে সকল মানুষ গুলো দেখা যায়,তাদের জন্য শীতকাল যেন এক বিশাল অভিশাপ। রাত নামতেই যখন শীতের প্রকট ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তখন দেখা যায় এক মর্মান্তিক দৃশ্য। রাস্তার পাশে থাকা ছোট বড়,বৃদ্ধ সকলেই কাপতে থাকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন সেই হাঁড় কাপানো ঠান্ডায়।
কাগজে-কলমে শীত আসতে এখনও কিছুদিন বাকি। অথচ এরমধ্যে শীতের আগমনী গান উত্তরের বাতাসে। শীত আসছে হামগুড়ি দিয়ে। গ্রামাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে এখন থেকেই বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে সব কিছু।
রাজধানী ঢাকায় এখনও সেভাবে শীত অনুভূত না হলেও সন্ধ্যা আর মাঝ রাতে ঠিকই শীতের আমেজ টের পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে ক্রমাগত তাপমাত্রা কমছে সারা দেশের। বিগত কয়েকদিনে সারা দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করেছে। ক্রমেই ব্যবধান কমছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার। ফলে এবার শীত মৌসুমে হাড় কাঁপানো শীতের আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
প্রতি বছর শীতেই দেশব্যাপী কয়েকশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। শীতে প্রাণহানির সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্র ধরে বলা যায়, মাঘ মাসের শীতে দেশব্যাপী প্রতিদিন অন্তত ৩-৪ জন প্রাণ হারায়। এর মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক, শিশু ও গরিব অসহায় মানুষ। প্রাণহানির পাশাপাশি শীতজনিত রোগবালাইও তো আছেই।যার কারনেও প্রান হারাচ্ছে অনেক মানুষ।
শীতকালে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় গরিব অসহায় মানুষদের জন্য ত্রান সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়।শুধু যে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রান বিতরন করা হয় তা বললে ভুল হবে কারন সরকারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ এবং বিভিন্ন এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তিগন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন গরিব অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের প্রতি।তার পাশাপাশি রাজনৈতিক কিছু নেতাকর্মীরাও তাদের নিজ নিজ এলাকায় শীতবস্র বিতরনের মধ্য দিয়ে শীতার্ত মানুষের পাশে এসে দাড়ায়।
আমাদের সকলের উচিত শীতের আনন্দটাকে উপভোগ করা এবং তার পাশাপাশি গরিব অসহায় ও শীতার্ত মানুষের পাশে এসে দাড়ানো।
Leave a Reply