মোঃ সেলিম, নিজেস্ব প্রতিবেদক:

নোয়াখালী জেলা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনটি খাল পুনরুদ্ধারের জন্য উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। আর এই খালগুলো হচ্ছে ছাগলমারা খাল, সোনাপুর-চরজব্বার খাল ও সোনাপুর-নোবিপ্রবি খাল।

শনিবার (২৪ আগষ্ট) সকালে সোনাপুর বাজারের জিরো পয়েন্ট এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত করা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। তবে উচ্ছেদে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।

দীর্ঘদিন থেকে দখল, দূষণ আর সংস্কারের অভাবে এসব খালের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে এ খাল গুলো। শহরের পানি নামার একমাত্র পথ এ খালগুলোতে গড়ে উঠেছে বাড়িঘর, দোকানপাট’সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা।

যে কারণে প্রতি বছর বর্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শহরের বেশিরভাগ এলাকাই থাকে জলবদ্ধ। এতে তলিয়ে যায় বাসাবাড়ি, অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ রাস্তাঘাট।

অবশেষে এসব খাল দখলমুক্ত এবং পুনঃরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয় নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, পৌরসভা।

বিএডিসির মাধ্যমে ২৭ জুন থেকে মাইজদী পৌর বাজারের সামনে থেকে ছাগলমারা খাল দখলমুক্ত করে পুনঃখননের মাধ্যমে এ কাজ শুরু করা হয়। উক্ত কাজের তত্ত¡বাবধন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

এরপর শনিবার সকাল থেকে সোনাপুর বাজাওে অবস্থিত খালের উপর গড়ে উঠা শত শত অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়।

সোনাপুর পৌর বাজার কমিটির সভাপতি সৈয়দ জামান নাসের লিটন জানান, উচ্ছেদ অভিযানের কারণে শত বছরের সোনাপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা পথে বসার পথে। ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা ঋণের এ বোঝা কে নেবে?
ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবিও জানান তিনি।

এ বিষয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, মাইজদী থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ছাগলমারা খাল, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খনন কাজ এগিয়ে নেয়া হবে, এক্ষত্রে কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।

অপর দিকে যেকোনো মূল্যে এ খালগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান সদর-সুবর্ণচর আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী।

উক্ত খাল পুনরুদ্ধারে প্রশাসনকে সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্লাহ খাঁন সোহেল ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম শামছুদ্দিন জেহান।

খাল খনন ও সরকারী জায়গা দখল মক্ত করার বিষয়ে জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান, শহরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো খাল দখলমুক্ত না হলে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে না বলে স্বীকার করেন তিনি।

তিনি আরো জানান, পুরো খাল এবং খালের পাড় অবৈধ দখলমুক্ত করার পর যাতে পুনরায় বেদখল না হয় সে ব্যাপারেও পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন।

এ অভিযানে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড সোনাপুর জিরো পয়েন্ট থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক এবং সোনাপুর-সুবর্ণচর সড়কের পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়।

নোয়াখালী পৌরসভা, পিডিবি ও বাখারাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মকর্তারাও এ
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।

Sharing is caring!