নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

.

কুমিল্লা নোয়াখালীসহ দেশের কয়েকটি স্থানে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষকরা।

.

রোববার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ দাবি করেন।

.

.

মানববন্ধনে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, যারা অন্যের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা করে তারা নিজেদের ধর্মকেই বুঝে না। সকল ধর্মেই ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। সম্প্রীতি ও ঐক্যকে যারা ভন্ডুল করতে চায় তাদেরকে হুশিয়ারী করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার কোন যায়গা হবে না।

.

মৎস্য ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐক্যের ইতিহাস, দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে-ও আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ দেখতে পারিনি।প্রতিক্রিয়াশীল উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির স্থান বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলায় হবে না।

.

মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, আমরা আগে বাংলাদেশের নাগরিক তারপর আমাদের ধর্ম। নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। ধর্মের পরিচয়ের আগে আমরা বাঙালী। চলমান এই অত্যাচার হিন্দুদের উপর নয়, এটা প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলা। অপশক্তিরা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে নিজেরা ক্ষমতায় আসতে চায়। এসব অপশক্তিকে একত্রে রোধ করতে হবে।

.

 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শুভেন্দু সাহার সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

.

প্রতিবাদ সভা শেষে তাঁরা ৫ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।

.
১. চলমান সন্ত্রাসের যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এরকম গর্হিত অপরাধ করার সুযোগ আর কেউ না পায়।

.
২. পূর্বে রামু, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার সংঘটিত হামলায় জড়িত সকলের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

.
৩. হামলার শিকার মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

.
৪. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জান-মাল রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করতে হবে। সেই সাথে যদি কোন প্রশাসনিক ব্যক্তি হামলা ঠেকাতে গাফিলতি থাকে তাও খতিয়ে দেখে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

.
৫. সামনের বছরগুলোতে যেন দুর্গোৎসবসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অনুষ্ঠানগুলোতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে।
আমরা মনে করি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খিস্টান- সবাই মিলেই বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশে বাংরবার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া ও জান-মালের ক্ষতি হওয়া রাষ্ট্রীয় অবহেলার সামিল। এবিষয়ে রাষ্ট্র আরো তৎপর ও সোচ্চার হবে এটাই প্রত্যাশিত।সকলের মঙ্গল হোক।

 

.

 

এইচ/আর

Sharing is caring!