এনকে টিভি আন্তর্জিক ডেস্ক:

ভারতের বাবরি মসজিদ মামলার চূড়ান্ত রায়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত অযোধ্যার বিতর্কিত ওই ভূমিতে একটি মন্দির নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর পরিবর্তে অযোধ্যার অন্য কোনও স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর ভূমি পাবেন মুসলিমরা।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বাবরি মসজিদ নিয়ে দেওয়া রায়কে ‘অন্যায্য’ অভিহিত করে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন মুসলিমরা। ভারতের কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড আপিল করার চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী জাফারিয়াব জিলানি।

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা অনায্য …আমরা এই রায় মানতে পারছি না। আমরা রায়ের সব অংশের সমালোচনা করছি না।’

তিনি বলেন, “সমস্ত জমি অন্য পক্ষকে দেওয়া ঠিক নয়। আমরা শীর্ষ আদালতকে সম্মান জানাই, আমাদের রায়ের সঙ্গে সহমত না হওয়ার অধিকার আছে। শীর্ষ আদালতে অনেক মামলারই রায় বদলে গেছে। এ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর অধিকার আমাদের আছে”।

বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য দেয়ার রায় ব্যাখা করে আদালত বলেছে, আর্কিওলজি সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রমাণ পেয়েছে যে, মোঘল সম্রাট বাবরের ১৬ শতকের মসজিদ ফাঁকা জায়গায় নির্মাণ করা হয়নি। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে দেন দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুরা। তাদের বিশ্বাস, হিন্দুদের দেবতা রামচন্দ্রের জম্মভূমির ওপর তৈরি করা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।

ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছেন, মুসলিমরা মসজিদ পরিত্যক্ত করে দেননি এবং তাদের নির্মাণ থেকে বঞ্ছিত করা যাবে না। হিন্দু মহাসভার আইনজীবী বরুণ কুমার সিংহ বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের মধ্যে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে।’

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিমদের পাঁচ একর জমি দিতে চেয়েছেন আদালত এই জমি নিতে আপত্তি জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমেন (এআইএমআইএম) প্রেসিডেন্ট আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। রায়ে বাস্তব সত্যির জয় হয়নি। আমরা আমাদের আইনি অধিকারের জন্য লড়ছি। একই সঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট মুসলিমদের যে খয়রাতির ৫ একর জমি দিতে চেয়েছে, তা তাঁদের চায় না।

ওয়াইসি বলেন, এমনি মানুষের কাছে চাইলেই মুসলিমরা ৫ একর পেয়ে যাবে। সরকারের খয়রাতির প্রয়োজন নেই। হায়দরাবাদের সাংসদের বক্তব্য, “আমরা আমাদের আইনি অধিকারের জন্য লড়ছি। ভারতের মুসলমানদের এতটা খারাপ দিনও আসেনি যে খয়রাতির জমি নিতে হবে। আমরা যদি এভাবেই ভিক্ষা করতে থাকি তাহলে তাহলে এগোতে পারব না। মুসলিম বোর্ড কি সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাঁদের সিদ্ধান্ত। তবে আমার মত হচ্ছে, ভূমি দানের এই প্রস্তাব আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত।”

Sharing is caring!