বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার স্বর্ণা আক্তার ওরফে মিশু নামে এক শিক্ষার্থী। বুধবার (১০ মে) সকালে উপজেলার চরজব্বার ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষায় সকলের সহযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সে। এক আত্মীয়ের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে যায় স্বর্ণা।

শহীদ জয়নাল আবেদীন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে স্বর্ণা। ওই বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী সে। এর আগে মঙ্গলবার (৯ মে) রাতে দীর্ঘদিন ধরে পাকস্থলি ক্যানসারে আক্রান্ত স্বর্ণার বাবা শেখ আবদুল্লাহ ফারুক (৫০) জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরজুবিলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হানিফ চেয়ারম্যান বাড়ির আবদুল্লাহ। তার ছোট মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে বাড়িজুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়। বাবার মৃত্যুর পর স্বর্ণা আক্তার মিশু ভেঙে পড়লেও আত্মীয় স্বজনদের কথায় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায় সে। এ সময় শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দিলে সে পরীক্ষায় অংশ নেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সে বাড়িতে ফিরে যায়।

কেন্দ্রসচিব ও শহীদ জয়নাল আবেদীন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পারিবারিকভাবে স্বর্ণার বাবার জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল সকাল ১০টায়। একই সময়ে এসএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। স্বর্ণা বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় পরীক্ষা দিতে আসে কেন্দ্রে। সে যেন কোনোভাবেই মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে সেই চেষ্টা করেছি। সে সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। সামনের সবগুলো পরীক্ষায় সে যেন অংশগ্রহণ করে সেজন্য আমরা তাকে সহযোগিতা করব। পরীক্ষা শেষে সহপাঠীরা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) চৈতী সর্ববিদ্যা বলেন, বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা যে কারও জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও স্বর্ণা নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

Sharing is caring!