এনকে টিভি প্রতিবেদক,ফেনী:

 

ফেনীর পরশুরামে বদলিজনিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের চোখ উপড়ে ফেলা ও প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইকবাল হোসেন নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এই ঘটনায় তিনি পরশুরাম মডেল থানায় শনিবার (২১ মার্চ) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

জানা যায়, বিভিন্ন অনিয়মের কারণে পরশুরামের পশ্চিম সাহেব নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলগাজীতে বদলি করা হয়। এই বদলির পিছনে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসূত্র রয়েছে এমন ধরণা করে প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে লাঞ্ছিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে জানা যায়, গত বছরের (২০১৯ সাল) এর ১৯ জুন তৎকালীন পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেলুল কাদের উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম সাহেব নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত পান। এসময় তিনি বিদ্যালয়ের পরিদর্শন খাতা দেখেন এবং বিগত সময়ে বিদ্যালয় যারা পরিদর্শন করেছে উনাদের বেশির ভাগ কর্মকর্তাই পরিদর্শন খাতায় প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেনের শ্রেনী কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি পরিদর্শনে মন্তব্য লিখেন।

এই ব্যাপারে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল কাদের বিষয়টি ফেনী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে জানান। পরে দুই বারে তদন্ত শেষে দোষী প্রমানিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে এই বছরের (২০২০ সাল) এর ২৭ ফেব্রæয়ারি পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলগাজী শ্রী চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

প্রধান শিক্ষক ইকবালের বদলির সাথে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার হাত রয়েছে এমন অভিযোগে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন পরশুরাম উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে এবং হত্যা করার হুমকি দেন। এসময় অফিসের অন্যান্য সবাই তাকে শিক্ষা অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। একই দিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পরশুরাম বাজারে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ও চোখ উপড়ে ফেলাসহ প্রকাশে হত্যার হুমকিদামকি দেন প্রধান শিক্ষক ইকবাল।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি চাকরি জীবনে কখনো কোনো শিক্ষক অন্যায়ভাবে কষ্ট পাক তা কামনা করিনি। গত বছর পরশুরাম উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকায় ইকবাল হোসেন ধারণা করেছেন তার শাস্তিমূলক বদলির পেছনে আমার হাত ছিল। প্রকৃত পক্ষে তার বদলিতে আমার কোন ভূমিকা ছিল না, তার বদলি ছিল বিভাগীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার সময় তাকে মারতে তেড়েও আসেন ওই প্রধান শিক্ষক। এ সময় স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শারীরিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পেলেও সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মিজানুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ এবং চোখ উপড়ে ফেলে প্রাণনাশের হুমকি দেন ইকবাল হোসেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের মুঠোফোনসহ বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় পরশুরাম মডেল থানায় ওসি শওকত হোসেন জানান, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়ার লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন এবং যথার্থ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছন তিনি।

  • এনকে টিভি/বি/এস/এম/এস

Sharing is caring!