এনকে টিভি প্রতিবেদকঃ  
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হক অসাধারণ ফলাফল নিয়ে ২০২০ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশনের র‍্যাংকিং এ এশিয়ার প্রথম দিকের বিশ্ববিদ্যালয় চীনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এ্যান্ড ইকোনমিকস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চীন সরকারের বৃত্তির আওতায় পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

 

তার গবেষণার শিরোনাম ছিলঃ” আনভেইলিং দ্যা ডিটারমিনেন্টস এ্যান্ড দ্যা ইফেক্ট অফ অনলাইন সোস্যাল নেটওয়ার্ক অন দ্যা ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টমেন্ট ডিসিশনঃ ইনডিভিযুয়্যাল, ইনস্টিটিউশন্যাল ইনভেস্টরস এ্যান্ড ভার্চুয়াল কমিউনিটিস কন্টেক্টস”

 

চীনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এ্যান্ড ইকোনমিকস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভর্তি হওয়া ২৪ জন পিএইচডি শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করে ড. মো. জিয়াউল হক “মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং এওয়ার্ড” লাভ করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেন।

 

মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার পাচঁখোলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল জাফরাবাদ গ্রামে ড. মো. জিয়াউল হকের জন্ম। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন লেখাপড়ায় অত্যন্ত মনোযোগী। তৃতীয় শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত প্রতি শ্রেনীতেই তিনি প্রথম স্হান অর্জন করেন। চার বছর বয়সে মাকে এবং নয় বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে তিনি ভীষন মানসিক ও আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হন। শত প্রতিকুলতার মাঝে ও তিনি দমে যাননি।

 

মাদারীপুর পাবলিক ইন্সটিটিউশন থেকে সাফল্যার সাথে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজের বানিজ্য বিভাগে সেখান থেকে সফলতার সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় আইন,ইংরেজি সাহিত্যসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগে। সেখান থেকে বিবিএ তে ৩.৮৯ পেয়ে মেধাক্রমে ৩য় স্থান অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগ থেকে এমবিএতে ৩.৯৬, পেয়ে মেধাক্রমে ১ম স্থাম অর্জন করে ।

 

ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি জানান যে, ‘‘ পিএইচডি করা মানে শুধু একটি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করাই নয়, পিএইচডি গবেষণার শুরুমাত্র। পিএইচডি আসলে শেখায় কীভাবে গবেষণা করতে হয়, গবেষণার প্রকার, প্রতিটি ধাপ, প্রটোকল, পদ্ধতি নখর্দপনে আসে এবং এ জ্ঞান বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করতে সহায়ক হয়।‘‘ তিনি বলেন যে, ‘‘পিএইচডি থেকে নেওয়া শিক্ষা দেশের উন্নয়ন ও নাগরিকদের সেবায় কাজে লাগাতে চাই। যেখানেই কাজ করিনা কেন অর্জিত জ্ঞানের প্রতিফলন রাখার চেষ্টা করবো। সবার আগে মানুষ তথা সৃষ্টির কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিব।‘‘

 

তাঁর গবেষণা থেকে ১৯টি আর্টিেকল বিভিন্ন বিশ্বখ্যাত পিয়ার রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে জার্নাল অব ইনফরমেশন এন্ড নলেজ ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব বিজনেস ইনফরমেশন সিস্টেমস, জার্নাল অব ইনটারপ্রেনিয়রশীপ ইন ইমার্জিং কান্ট্রিজ অন্যতম। এছাড়া তাঁর গবেষণা কর্ম ২টি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং কনফারেন্স প্রসিডিংস হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে।

 

ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স এর স্কুল অব বিজনেসের সহযোগী ডিন প্রফেসর ডঃ আইমিন কিয়ান বলেন “মোঃ জিয়াউল হক অত্যন্ত নিয়মিত, আন্তরিক ও নিবেদিত গবেষক। তিনি Web of Science এবং Scopus ইনডেক্স জার্নালে বেশ কিছু গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন। তিনি তার পিএইচডি কোর্সের কোর্সওর্য়াকে অসাধারন নম্বর পেয়ে (৯০% এর উপরে) পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন । উল্লেখযোগ্য যে তিনি রিসার্চ ইনস্ট্রুমেন্ট কোর্সে ১০০% নম্বর পেয়েছেন যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এক লক্ষণীয় সাফল্য। আমি তার পিএইচডি গবেষনায় সন্তুষ্ট এবং তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।”

Sharing is caring!