সুবর্নচর প্রতিনিধি :-

প্রেমেশ চন্দ্র দাস পিতাঃ সুনীল চন্দ্র দাস, হাতিয়া, নোয়াখালী ১৯৮৭ সালে কক্সবাজার জেলার উখিকা উপজেলায় সরকারি শিক্ষক হিসেবে চাকুরি নিয়ে ৩ বছরের মাথায় ১৯৯০ সালে বেসরকারি বিদ্যালয়ের ভূয়া অভিজ্ঞতা সনদ দাখিল করে পদোন্নতি নিয়ে প্রধান শিক্ষক হন। তার মামা শশুর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন কর্মকর্তা অজিত প্রসাদ এ কাজে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালের দিকে তিনিই প্রেমেশ চন্দ্র দাস কে চট্রগ্রাম মহানগরীতে বদলী করে আনেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকবার বদলী, সাময়িক বরখাস্তসহ কারাবরণ করে সর্বশেষ ২০০৪ সালে সন্ধীপ উপজেলায় বদলী হন এবং তারই সহোদর দেবেশ চন্দ্র দাসের সুবর্ণচরস্থ চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের চর বজলুল করিম গ্রামের বসত বাড়ির ঠিকানার অনুকুলে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ২০০৮ সালে সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয় আসেন। বদলী হয়ে এসেই তিনি নারী সংক্রান্তসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। নারী সংক্রান্ত বিষয়ে ২০১০ সালে তার বাড়ির দরজায় উত্তেজিত জনতার মাধ্যমে অপমান হয়ে উপজেলার অভ্যন্তরে চরক্লার্ক বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হন। ১ বছরের মাথায় সে বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি আত্মসাৎ ও পঞ্চম শ্রেণির মেয়েরা তার দ্বারা নির্যাতিত হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নোয়াখালী স্মারক নং ২৮৩৪/৪ তারিখ ৯/৯/২০১২ মোতাবেক বিভাগীয় মামলা রুজু করেন। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাসিনা আকতার ভুইয়ার তদন্ত প্রতিবেদনে যৌন হয়রানির বিষয়টি সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার স্মারক নং প্রাশিঅ/৬সি/ ১৫বিদ্যা -চট্ট/২০০৯/৯২২/১ তারিখঃ ২৪/৭/২০১৩ এর নির্দেশনা অনুযায়ী সুবর্ণচরের দূরবর্তী বিদ্যালয় উত্তর চরক্লার্ক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর আদেশ দেন এবং একই পত্রের আলোকে স্মারক নং ২৫৮৯ তারিখ ১৩/১১/২০১৩ মোতাবেক প্রেমেশ চন্দ্র দাসের বেতন নিন্মধাপে নামিয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এগারতম গ্রেড ৬৪০০- ১৪২২৫ যা বর্তমান ২০১৫ বেতন কাঠামো অনুযায়ী ১২হাজার ৫শত- ৩০ হাজার২৩০ বেতন ধাপ নির্ধারনের আদেশ জারি করেন। উক্ত আদেশের বিষয়ে প্রেমেশ চন্দ্র দাস মহাপরিচালক , প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকার বরাবরে আপিল করলে আদেশ নং -১৪/ডি/ ১৪ বিদ্য-চট্ট/২০১৪ / ০৩/৪ তারিখ ০৮/০১/ ২০১৫ অনুযায়ী নিম্নধাপ বেতন নির্ধানের আদেশই বহাল রাখেন। উক্ত প্রেমেশ চন্দ্র দাস শাস্তিমূলক বদলী হয়েই উত্তর চরক্লার্ক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষাকাকে যৌন হয়রানি শুরু করলে ঐ শিক্ষিকার আবেদনের প্রেক্ষিতে নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের স্মারক নং ৫৫৯ তারিখঃ ৩/৩/ ২০১৪ মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে অধিকতর তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো প্রমানিত হওয়ায় মহাপরিচালক , প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকার স্মারক নং – প্রাশিঅ / ৮টি/৪-বিদ্যা -চট্ট/ খন্ড-৪ (২)২০১৩/৩১১ /৪ তারিখ ০৭/১২/ ২০১৪ অনুযায়ী নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দূরবর্তী বিদ্যালয় তমরুদ্দী কোরালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়।

উল্লেখ্য উক্ত শিক্ষককে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অভিভাবক মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কর্তৃক আপিলের নিম্নধাপে ১১তম গ্রেডের ১২৫০০ বেতন স্কেলের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাংগুলী দেখিয়ে ৮ম গ্রেডে ২৩০০০- ৫৫৪৭০/ স্কেলে ২৯৩৭০/ টাকা মূল বেতনে একেবারেই অবৈধ পন্থায় হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভবরঞ্জন দাসের সহযোগিতায় ০১/১০/২০১৮ তারিখ হাতিয়া হিসাব রক্ষণ অফিসের টোকেন নং ০০০১২২৬ টোকেন মূলে পাশ হওয়ায় ঐ তারিখ থেকে প্রতিমাসে মূলবেতনই ১৬০০০ টাকা অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে লোপাট করে নিচ্ছে। ২০/৯/২০১৮ তারিখের বিল নং ৫৬ নং বিলে অবৈধ ভাবে ৬২১২৩৩/- ( ছয় লক্ষ একুশ হাজার দুইশত তেত্রিশ) টাকা এককালীন উত্তোলন করেন। উক্ত প্রেমেশ চন্দ্র দাস মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,ঢাকার আপিলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে কর্মচারি আপিল ট্রাইবু্নালে দুটি মামলা করেছেন যা এখনও চলমান। আবার ঐ শিক্ষকের প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতির অনিয়মের বিষয়েও এখনও চুড়ান্তকোন সমাধান হয়নি অথচ তিনি কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে ৮ম গ্রেডে ২৩০০০- ৫৫৪৭০/ স্কেলে ২৯৩৭০/ টাকা মূল বেতনে নিয়মিতভাবে উত্তোলন করে যাচ্ছে। বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমাধান করে সরকারি অর্থ তসরুপের বিষয়ে ব্যবস্থা জরুরী।

অভিযুক্ত প্রেমেশ চন্দ্র দাসের সাথে উপরোক্ত বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কাগজ পত্রে দিক দিয়ে বেতন ভাতা উত্তোলণ করছি, যৌন হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভবরঞ্জন দাস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের আদেশ ও কাগজপত্রের আলোকে এ বিল করা হয়েছে।

উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ নিজাম উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষা অফিস থেকে আদেশ হয়ে আসলে আমরা এ বিলের ব্যবস্থা করি।

Sharing is caring!