এনকে টিভি ডেস্ক:

 

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের প্রতিটি স্তরেই চমক থাকবে। ক্ষমতাসীন দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করতে প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে পরিবর্তন আনা শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী দিনগুলোর জন্য সংগঠনের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কর্মীবান্ধব ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করাই মূল চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন দলের হাইকমান্ড।

 

তবে প্রতিটি জেলায় পুরনোদের আধিপত্য এতোটাই বেশি যে ইচ্ছা করলেও বলয়মুক্ত করা যাচ্ছে না। যে কোনো কৌশলে তৃণমূলে পুরনোরাই নতুন নেতৃত্বে ফিরে আসছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে পুরনোরাই তৃণমূলের নেতৃত্বে বহাল হচ্ছেন। নতুনরা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। কমিটিগুলোতে কিছু কিছু নতুন মুখ জায়গা পেলেও পুরনোদের বলয়েই হচ্ছে তাদের অবস্থান।

তবে বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্বে থাকা ক্ষমতাসীন দলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা মনে করেন নেতৃত্ব বাছাইয়ে শুদ্ধি অভিযানের সফলতা পেতে হলে দলের আদর্শ হারানো ও দুর্নীতিবাজদের অবশ্যই বাদ দিতে হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ সমর্থন করে থাকেন এমন মানুষ যারা দলীয় কার্যালয়গুলোতে আসা-যাওয়া করেন তারা মনে করেন সংগঠনে যারা দীর্ঘদিন পদপদবীতে আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই নানা অপকর্ম করে আওয়ামী লীগের দুর্নাম করেছেন। তারা পদে থেকে অপরাধ বুঝতে পারছেন না। তবে সাধারণ মানুষ খালি চোখেই তাদের করা অপরাধ দেখছেন কিন্তু প্রতিবাদ করছেন না। তাদেরকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে।

শুদ্ধি অভিযান শুরু করায় সংগঠনে আগামীতে ভালো নেতৃত্ব আসবে সেই প্রত্যাশাই দলটির সাধারণ নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের কাছে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা বা সততার রাজনীতি উপহার দেয়াই এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও বড় চ্যালেঞ্জ।

দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, অনুপ্রবেশকারীরা কোন পর্যায়ের নেতৃত্বে আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগের ত্যাগীরাই নেতৃত্বে আসবেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থেকে যারা বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে কথা বলছেন তাদের জায়গা আগামীতে কতটা সুসংহত তা নিয়েও দলের মধ্যে রযেছে ধোঁয়াশা। এবারের কাউন্সিলে গঠিত নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কে থাকেন আর কে বাদ পড়ছেন তা একমাত্র দলের হাইকমান্ডই জানেন।

আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর। সামনে সময় আছে আর এক মাস। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে কারো কাছেই পরিষ্কার ধারণা নেই।

আওয়ামী লীগের কোনো কেন্দ্রীয় নেতা ধারণাই করতে পারছেন না দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে কে আসছেন। তবে কেউ কেউ মনে করেন ওবায়দুল কাদেরই সাধারণ সম্পাদক পুননির্বাচিত হবেন। এবারের কাউন্সিলে চমক হিসেবে দলটির ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির বড় অংশেই পরিবর্তন আসতে পারে।

দলীয় সূত্র জানায় আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আগামী ৪ ডিসেম্বর গণভবনে দলটির জাতীয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় সংগঠনের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকে সংগঠনের কিছু কিছু বিষয় পরিবর্তনের প্রস্তাবও আসতে পারে। শুদ্ধি অভিযানের পক্ষে এবং তা তৃণমূল পর্যন্ত পরিচালনা অব্যাহত রাখার দাবি জোরালো হতে পারে।

Sharing is caring!