করোনামুক্ত রয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। সেন্ট মার্টিনের প্রায় ৮০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে এ পর্যন্ত কারও শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ৩ শতাধিক  ছিল নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্য।

ছোট এই দ্বীপ ইউনিয়নে জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। কিন্তু প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে লক্ষাধিক পর্যটক ভিড় করে এই দ্বীপে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে দেশবাসীর বরাবরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। করোনা মহামারিতে কেমন আছেন এই দ্বীপের বাসিন্দারা। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নিরাপদে আছেন দ্বীপবাসী। এই দ্বীপের কেউই এখনো করোনা আক্রান্ত হয়নি।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে সেন্টমার্টিনে বাইরের মানুষের যাতায়াত বন্ধ ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে অনেকটা অঘোষিত লকডাউনে ছিল এই দ্বীপের বাসিন্দারা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, কিছুদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি থাকলেও এখন সেন্টমার্টিন যাতায়াতে বাধা নেই। যদিও সরকার দ্বিতীয় দফা লকডাউন ঘোষণা করার পর সেন্টমার্টিন যাওয়া-আসায় কড়াকড়ি ছিল। ব্যবসায়িক কাজ শেষে কেউ এখানে ফিরলে নৌবাহিনীর শরীর চেকআপের মাধ্যমে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিতো। সেন্টমার্টিনে ১০ শয্যার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু করোনার কারণে তিনি গত দেড় বছর ধরে সেখানে অনিয়মিত।

সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক জানান, সেন্টমার্টিনে এখনো কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। কারও শরীরে উপসর্গও পাওয়া যায়নি। তার মতে, স্থানীয় ও চাকরিজীবী মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় হাজার জন নমুনা পরীক্ষা দিয়েছে। সবার ফলাফল নেগেটিভ আসে।

দ্বীপের ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে একজন এমবিবিএস ডাক্তারের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও দেড় বছর ধরে তিনি অনিয়মিত। ১ জন এমএলএসএস রোগীদের প্যারাসিটামল আর  স্যালাইন দিয়ে কোনো মতে চালিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালের কার্যক্রম।

কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনার শুরু থেকে আমরা সেন্টমার্টিনকে নিরাপদ রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত কারও শরীরে করোনার উপসর্গ পাওয়া যায়নি। সে হিসেবে বলা যায়, সেন্টমার্টিনের মানুষ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জেলার আট উপজেলা ও তিন পৌরসভায় ৬ই জুন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে মোট ১০ হাজার ৭২৯ জনের। এরমধ্যে, গত ৫ই জুন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছে ১১৪ জন। তারমধ্যে, ১৮ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ১.০৭%।

রোহিঙ্গা ছাড়া জেলায় ৯ হাজার ১৩১ জন করোনা রোগীর মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভাসহ সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৫৪৫ জন, উখিয়ায় ১ হাজার ২৫০ জন, টেকনাফে ৯২৫ জন, চকরিয়ায় ৭৬৫, রামুতে ৬৩৭, মহেশখালীতে ৬২৫, পেকুয়ায় ২৭৪ ও কুতুবদিয়ায় ১১০ জন।

Sharing is caring!