নিউস ডেস্ক:

দালালের খপ্পরে পড়ে টাকা দিয়েও হজে যেতে পারছেন না পঞ্চগড় জেলার ৩৭ জন হজযাত্রী। প্রায় কোটি টাকা নিয়ে দালালদের উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

বিষয়টি নিয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে দেখা করেছেন তারা। তবে সরকারিভাবে নিবন্ধীত না হওয়ায় এ বিষয়ে প্রশাসনের তেমন কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ভুক্তভোগীদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওয়াছেদ আলী নামে এক মোয়াল্লেমের কাছে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৩৭ জন ব্যক্তি হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দেন। কিন্তু কথিত মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলীসহ প্রতারক চক্র হজযাত্রীদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। তাই প্রাক-নিবন্ধন করা হলেও এ সব হজযাত্রী এ বছর হজ করতে পারছেন না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কথিত মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলী কুমিল্লার লাকসাম এলাকার আব্দুল জলিলের যোগসাজশে প্রত্যেক হজযাত্রী বাবদ দুই থেকে তিন লাখ টাকা নেয়। এটিএম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড ও সানফ্লাওয়ার এয়ার লিংকার্সসহ বিভিন্ন হজ এজেন্সির নামে নিবন্ধন দেখায় তারা।

তারা জানান, প্রাক-নিবন্ধনের পরও হজে যেতে না পেরে তারা টাকা ফেরত নেয়ার জন্য ওয়াছেদ আলীর বাসায় যান ভুক্তভোগীরা। কিন্তু একাধিকবার খুঁজেও তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট ফকিরপাড়া এলাকার মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলী ও কুমিল্লার লাকসাম এলাকার আব্দুল জলিল এটিএম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড ও সানফ্লাওয়ার এয়ার লিংকার্সসহ বিভিন্ন হজ এজেন্সির নামে দুই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন।

তাদের হজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। সেই মতো হজে যাওয়ার জন্য প্রাক-নিবন্ধনও করেন তারা। কথা ছিল শেষ দিকে তাদের হজে পাঠানো হবে। মোয়াল্লেম ওয়াছেদের কথা মতো তারা হজের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।

কিন্তু শেষ দিকে এসে টালবাহানা করেন ওয়াছেদ। একপর্যায়ে ঘা ঢাকা দেয় ওয়াছেদসহ প্রতারক চক্রের সবাই। এতে হজের আগ মুহূর্তে দিশেহারা হয়ে পড়েন ৩৭ জন মুসল্লি। চাহিদামতো টাকা দিয়েও হজে যেতে না পারায় কষ্টের সীমা নেই তাদের। দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতার জন্য ঘুরছেন তারা। ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা উদ্ধারসহ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা।

নিরুপায় হয়ে তারা পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া অভিযোগে প্রতারণার শিকার হজযাত্রীরা জানান, হজে যাওয়ার জন্য তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনেকে দোয়ার অনুষ্ঠান করে স্বজনদের থেকে বিদায় নিয়ে রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে হজে যেতে না পেরে তারা আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যয়ের স্বীকার হয়েছেন।

জেলার বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ ধামেরঘাট এলাকার দারাজ উদ্দিন বলেন, ‌হজে যাব সবাইকে বলেছি। টাকাও দিয়েছি ২ লাখ। কিন্তু হজে যেতে পারলাম না। আমি এখন অসহায়।

Sharing is caring!