জিহাদ সুলতান:দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাঙালীর জীবনে বাজতে শুরু করেছে সেই চিরাচরিত আনন্দ ধ্বনি, সেই আগমনীর সুর। আকাশে বাতাসে শিউলির গন্ধ আর কাশ ফুলের ছড়াছড়ি। শরতের হিমেল হাওয়ায় জেগে উঠবে ঘুমন্ত পরীরা। কারণ, ঘরের মেয়ে ফিরছে ঘরে। উমা, গৌরি, মৃন্ময়ী যা বলেই ডাকি না কেন তাকে তার আগমনেই শুরু হয় উৎসব। প্রত্যেক বাঙালীর জীবনে প্রেম, ভালোবাসা, নতুন সম্পর্ক এই সব কিছুরই শুভারম্ভ হয় দুর্গা পুজোর মাধ্যমে। এই উৎসবে রাগ, অভিমান সব ভুলে সবাই সবাইকে আপন করে নেয়।

এতক্ষণে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝেই গেছেন আমি কীসের কথা বলছি! হ্যাঁ আমি বলছি ‘দুর্গা পূজা’ – সেই আবেগঘন উৎসবের কথা। যার জন্য সারা বছর ধরে অপেক্ষা করা হয়। বাঙালীদের কাছে এই উৎসবের প্রস্তুতি শুরুই হয় প্রায় ছয় মাস আগে থেকে। পুজো প্রস্তুতির আলোচনা, দুর্গা ঠাকুরের মূর্তি তৈরি করা থেকে শুরু করে, পুজোর প্যান্ডেল প্রস্তুতি এই সবকিছুই চলে প্রায় মাসের পর মাস ধরে।এই সব কিছু আমাদের মনে এক অন‌্যরকম আনন্দের সৃষ্টি করে।যা কখনো ভোলা যায় না।

তেমনি,,,

নোয়াখালীর দত্তের হাটে অবস্থিত ঐতিহাসিক সেই দেওয়ানজী বাড়ীতে চলছে পূজোর ধুমধাম আয়োজন।দত্তের হাট,সোনাপুর ও বিনোদপুরের ভক্তবৃন্দের উদ‌্যোগে এই শারদীয়া দুর্গোৎসব আজ ৫১তম বর্ষে পদার্পন করে। প্রতিবারের মতো এইবার ও তাদের আয়োজন সকলের চেয়ে আলাদা।দুর্গাপূজা হিন্দু বাঙালীদের সবথেকে বড় উৎসব হলেও কালে কালে তা অন্যান্য ধর্মের মানুষের কাছেও হয়ে উঠেছে উৎসবের সময়।

পূজার সময়ে হিন্দুদের মতোই মুসলমান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন – সকলেই মেতে ওঠেন উৎসবে।বাংলার উৎসবকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই আয়োজন আসলেই অনেক প্রসংশনীয়।বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অতিথিদের জন্য গেইট থেকে মন্ডপ অবধি দুই ধারে এবং স্টেইজের সামনে পযন্ত তৈরি করা হয়েছে বসার স্থান। দর্শকদের জন্য থাকছে আরো নানান রকম সুবিধা। এ ছাড়া প্রায় কয়েক শতাধিক দর্শক যাতে বসে শোভাযাত্রা দেখতে পান, তারও বন্দোবস্তো করা হয়েছে।

সব জায়গার অতিথিরা অপেক্ষায় রয়েছেন এই মুহূর্তের জন্যে।

গেইটের বাইরের  রাস্তা থেকে শুরু করে গেইটের ভিতরে সকল জায়গায় নানান রকম আলোর সমাহারে সজ্জিত দত্তের হাট দেওয়ানজী বাড়ি ও তার আশপাশের পুরো এলাকা।

প্রতিবারের মতো এই বারও নিরাপত্তায় কোন কমতি দেখা যায়নি। এই পূজোয় নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে আছে অসংখ‌্য সেচ্চাসেবক এবং আইন সৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

দত্তের হাট দেওয়ানজী বাড়ি পূজা কমিটির সাধারন সম্পাদক রিপন চন্দ্র কূরী জানান,স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান শামিম সহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে পূজার সকল কার্যক্রম।তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস‌্য ও সর্বস্তরের জনগনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

 

 

 

 

Sharing is caring!