নিজস্ব প্রতিবেদক : গত রোজার ঈদে রাজনৈতিক নেতাদের অনেককেই পাশে পাননি তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তবে এ ক্ষেত্রে কোরবানি ঈদের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।
এ ঈদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।
এসব দলের বর্তমান ও সাবেক এমপি-মন্ত্রীদেরও অনেকে এলাকায় ঈদ করছেন। আবার যারা ঢাকায় ঈদ করবেন তারা নিজ এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকাল ১০টায় গণভবনে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বেলা ১১টায় বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সমমর্যাদার বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। এছাড়া দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশিরভাগই ঈদ করতে যাচ্ছেন নিজ নিজ এলাকায়। যারা ঢাকায় ঈদ করছেন তারাও আগে বা পরে সময় করে দেখা করবেন নিজ নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করে বিকালে যাবেন নিজ এলাকায়। তবে শোকাবহ আগস্ট ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচির কারণে ঈদে এলাকায় খুব বেশি সময় দিতে পারবেন না তারা। এ কারণে বেশিরভাগ নেতাই ঢাকায় ফিরবেন ঈদের পরদিনই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদ করবেন নিজ এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানুষের সঙ্গে।
এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ করবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু। উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য তোফায়েল আহমেদও তার নির্বাচনী এলাকা ভোলায় ঈদ করছেন।
প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে মোহাম্মদ নাসিম ঈদ করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের সঙ্গে। প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকও টাঙ্গাইলে নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ করবেন। আর কাজী জাফরউল্লাহ ঈদে ঢাকায় থাকবেন। তবে ঈদের পর এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
প্রেসিডিয়ামের আরেক সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানও ঢাকায় ঈদ করবেন। ক্যান্টনমেন্ট মসজিদে তিনি ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
এছাড়া প্রেসিডিয়ামের অন্যদের মধ্যে সাহারা খাতুন ও পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্যও ঢাকায় ঈদ করবেন। ঈদের দিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে মাহবুবউল আলম হানিফ ঈদ করবেন নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায়। আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির স্বামী অসুস্থ। তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাকি দু’জনের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকায় ঈদ করবেন। আর আবদুর রহমান ঈদ করতে যাচ্ছেন নিজ এলাকায়। ঈদের পরদিন তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে আহমদ হোসেন নিজ এলাকা নেত্রকোনায়, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুরে, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাটে, পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম শরীয়তপুরের নড়িয়ায়, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল নিজ এলাকা চট্টগ্রামে ঈদ করবেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঈদ করবেন নিজ এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব রয়েছেন।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ঈদ করবেন নিজ এলাকা নেত্রকোনার কেন্দুয়ার মানুষের সঙ্গে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর ঈদ করবেন ঢাকায়। তবে ঈদের দিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকালেই নিজ এলাকা কুমিল্লায় যাবেন তিনি।
আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীও এবার ঢাকায় ঈদ করবেন। এছাড়া উপ-দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও ঈদ করছেন ঢাকায়।
তবে ঈদের পর বিপ্লব বড়ুয়া চট্টগ্রামে যাবেন বলে জানিয়েছেন। উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ঈদ করছেন নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে।
১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ঈদ করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকা কুষ্টিয়ায়। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকায় ঈদ করবেন এবং জাতীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়বেন।

Sharing is caring!