সাম্প্রতিককালে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা নিয়ে চরম উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠার জন্ম হয়েছে। বিগত কয়েকবছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন নজির লক্ষণীয় এবং যেটা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে অনেক জায়গায় শিক্ষকরা ক্লাসে কিছু বলার আগে কয়েকবার ভেবে বলতে হয় কেননা এটার বিপরীতে শিক্ষকদের পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষকরা চরম অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেননা শিক্ষকরা চাইলেই শিক্ষার্থীদের শাসন করতে পারেন না।

.

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা এবং নৈতিক অবস্থান থেকে দিনে দিনে সরে আসছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অমানবিক আচরণ লক্ষণীয়। গত ২৮শে আগষ্ট, প্রথম আলোতে শিক্ষার্থীদের নৃশংসতা নিয়ে একটি রিপোর্ট করা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন শিক্ষার্থীর চরম অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরেকজন শিক্ষার্থী। যা থেকে এটা প্রতীয়মান যে আমাদের শিক্ষায় নৈতিকতার বিলুপ্তি ঘটেছে অথবা ঘটতে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহিষ্কার এবং সাময়িক বহিষ্কারের মতন ব্যবস্থা নেওয়া স্বত্তেও কোনভাবেই যেন কিছু হচ্ছে না।

.

শিক্ষার্থীরা সমাজ এবং পরিবার থেকে তাদের বিছিন্ন করে ভাবতে শুরু করেছে এবং তার নিজেদের সমমনা গোষ্ঠীর সাথে একত্রিত হয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়িত হচ্ছে। যেটা সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পরিবারে সংকট তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার অভাব এবং সঠিক কাউন্সেলিং না থাকায় অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।

.

সমাজের এই মারাত্মক অবক্ষয়কে বন্ধ করতে হলে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। আজকের শিশুরাই আমাদের আগামীর আশার প্রতীক, সুতরাং তাদের সুন্দর আগামীর জন্য আমাদের সবার একান্ত প্রচেষ্টা সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

.

 

মো. তানবীর হায়দার
শিক্ষক,আব্দুল কাদির মোল্লা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।

Sharing is caring!