শীতে একটা কম্বলও পেলাম না।’ এভাবেই বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কাছে নিজের কষ্টের কথা জানান বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারের হকার আবু ছায়েদ।

১৯৭৮ সালে সাড়ে সাত বছর বয়সে পত্রিকা বিক্রির কাজ শুরু করেন আবু ছায়েদ (৫২)। ৪৫ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করছেন তিনি। তিনি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আলীপুর গ্রামের ফরিদ বেকারী বাড়ির মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে। এই শীতে একটি শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিনযাপন করছেন।

আবু ছায়েদ বলেন, ফেসবুক, ইন্টারনেটের কারণে পত্রিকা তেমন চলে না। সারাদিনে ১৫০টি পত্রিকা বিক্রি করলে ২৫০ টাকার মতো থাকে। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে সংসার। তারা ৫ জনই পড়ালেখা করে। কোনো রকম ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। খরচ বাড়তেসে, কিন্তু আয় কমতেসে। এমন পেশায় আছি আর বের হতে পারছি না। হয়তো মৃত্যু পর্যন্ত থাকতে হবে কিন্তু কেউ খবর নেবে না। একটা শার্ট পড়ে কনকনে শীতে ভোরে বের হই। সারাদিন ধরে পত্রিকা বিক্রি করি।

৩০ বছর ধরে নোয়াখালী জেলা শহরে পত্রিকা বিক্রি করেন মো. বাহার উল্যাহ। তিনি বলেন, পৌষের শীত সহ্য করেছে, এখন মাঘের শীত পড়ছে। সরকারি-বেসরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি।

সেনবাগ উপজেলার হকার ফরহাদ হোসেন বলেন, পত্রিকা বিক্রি তেমন হয় না। পাশাপাশি কোনো সহযোগিতা পাই না। ভাগ্যের দোষে এই পেশায় আছি। অন্য কোথাও যেতেও পারছি না। সুযোগ হইলে এই পেশা ছেড়ে দিবো।

দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার নাসির উদ্দীন বাদল বলেন, হকারদের পাশে কেউ নাই। এজেন্টরা লাভবান হচ্ছেন কিন্তু হকাররা কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। জনপ্রতিনিধিসহ বিত্তবানদের তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে। কিন্তু হকারদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি। তাদের জন্য খুব দ্রুত শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে ৫ হাজার কম্বল বিতরণ করেছি। এতে করে পৌরসভার শ্রমিক, দিনমজুর শীতবস্ত্র পেয়েছে। হকাররা যদি কেউ না পেয়ে থাকে তাহলে সামনে তাদেরও দেওয়া হবে।

Sharing is caring!